বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক :: উটের ডাকাডাকিতে নাকি রাতে ঘুম হয় না ইংলিশ ফুটবলারদের। দোহার গরমেও ভীষণ অস্বস্তি হ্যারি কেইনদের। কাতার বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ব্রিটিশ মিডিয়ায় অনুযোগের ঘটা। সেখানে ফরাসি মিডিয়ার খবর- রিসোর্টের মতো আল মেসিলা হোটেলে বেশ আছেন এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানরা। গান হচ্ছে, ডিজে পার্টি চলছে, ফরাসি টিভি সিরিয়ালও নাকি চলছে। আর সেই সঙ্গে প্লেয়িং কার্ড আর লুডু খেলা। ফরাসি সাংবাদিক জুলিয়ান লরেসের কাছে খবর আছে, ফুটবল বাদে নাকি সবকিছুই করতে বলা হচ্ছে সেখানে। কোচ দিদিয়ের দেশমের সাফ কথা নাকি এমন- কোনো দলের ক্যাম্পে যদি শান্তি থাকে, তাহলে ম্যাচ নাও জিততে পার, কিন্তু অশান্তি থাকলে ম্যাচ হারতেই হবে। উদাহরণ দিয়েছেন নাকি সদ্য বিদায়ী বেলজিয়ামকে দিয়েই। তা এই সুখের সংসার নিয়েই আজ শেষ ষোলোর নকআউটে চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স মুখোমুখি হবে পোল্যান্ডের। প্রতিপক্ষ নিয়ে ফরাসি স্টাডি- দলটি রক্ষণ খুব ভালোবাসে। তারা রক্ষণের দেয়াল তৈরি করেই টাইব্রেকারে ম্যাচ নিয়ে যেতে পারে।
মেক্সিকোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র, সৌদি আরবকে ২-০ গোলে হারানোর পর আর্জেন্টিনার সঙ্গে ২-০ গোলে হার। গ্রুপ পর্বে পোলিশদের এই ফলাফলই বলে দেয়, দেশমের কথাই সত্য। তারা ডিফেন্স খুব ভালোবাসে। তবে র্যাঙ্কিংয়ের ২৬ নম্বর দলকে নিয়ে কি লুডুর ছক করে ফেলেছেন দেশম? তিউনিসিয়ার সঙ্গে তো এই লুডু খেলতে গিয়েই সাপে খেয়েছিল তাঁদের! আজ অবশ্য দেশম বোর্ড সাজাবেন ৪-২-৩-১ এর চেনা ছকেই- জিরুদ, এমবাপ্পে, গ্রিজম্যান, দেম্বেলেদের দিয়েই।
পরিবর্তনের সেই ঝুঁকি নেবেন না ফরাসি কোচ। তিনি নিশ্চয় ভুলে যাননি, পোল্যান্ডের হাতেও আছে ‘আইস ব্রেকার’ লেভানডস্কি। নেহাত সতীর্থদের কাছ থেকে সেভাবে বল পাচ্ছেন না, কিন্তু সুযোগের সদ্ব্যবহার যে তিনি হাতছাড়া করেন না, সেটা বায়ার্ন মিউনিখে থাকতেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এখন বার্সায় এসে ফুল ফোটাচ্ছেন। এই লেভানডস্কিকে নিয়েই ফরাসিদের আজ যা কিছু চিন্তা। ‘এমনিতে আমি কারও সঙ্গে কারও তুলনা করতে পছন্দ করি না। তবে এটা বললে বাড়িয়ে বলা হবে না যে, এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন লেভানডস্কি। কিন্তু তাঁর দল বড্ড বেশি রক্ষণাত্মক খেলে, রক্ষণ তারা ভালোবাসে। এ জন্য হয়তো এই বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সেভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি লেভানডস্কি। আর আমরা তাঁকে সেই সুযোগটাও দেব না।’ হাসিমুখেই হালকা হুমকি ফরাসি কোচের।
দেশম তাঁর কথা বলে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর একই রুমে এসেছিলেন পোলিশ কোচ মিখনিউইজ। তিনিও ফরাসি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে ‘বিশ্বসেরা’ স্বীকৃতি দিয়ে বলেছেন, আজকের ম্যাচে কিন্তু সহজে এমবাপ্পেকে ছেড়ে দেবে না তাঁর ডিফেন্ডাররা। ‘এমবাপ্পের মতো বিশ্বসেরা খেলোয়াড়কে মাঠে মোকাবিলা করা কঠিন। এ জন্য টিম স্পিরিটের সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রিকভাবে সবাইকে ভালো খেলতে হবে। ও হ্যাঁ, আরেকটা বুদ্ধি আছে আমার মাথায়। আর তা হলো ডিফেন্ডারদের স্কুটার দিতে হবে এমবাপ্পেকে ধাওয়া করার জন্য।’ পোলিশ কোচের রসিকতায় হলরুমে হাসির আলোড়ন তুললেও এটা কিন্তু ঠিক, আজকের ম্যাচটিকে বিশ্ব মিডিয়া মার্ক করে রেখেছে ‘এমবাপ্পে বনাম লেভানডস্কির ম্যাচ’। ফ্রান্স নিশ্চিতভাবেই ফেভারিট। হয় আজ লেভানডস্কিকে বিদায় নিতে হবে, আর কোনো অঘটন ঘটলে এমবাপ্পেকে। দু’দলের ইতিহাস বলছে, এ পর্যন্ত ১৬ বার মুখোমুখি হয়েছে, যার আটটিতেই জিতেছে ফ্রান্স। পোলিশরা জিতেছে মাত্র তিনটিতে। পোল্যান্ড ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম শেষ ষোলোর ম্যাচে নামছে। সেখানে ফ্রান্স গত দুটি বিশ্বকাপেই এই পর্ব থেকেই বিদায় দিয়েছিল নাইজেরিয়া আর আর্জেন্টিনাকে। তথ্যগুলো এ জন্যই উল্লেখ করা, আজকের ম্যাচে ফরাসিরা নিশ্চিতভাবেই এগিয়ে, যদি লুডুর বোর্ডে তারা সাপের মুখে না পড়ে!